মোহাম্মদ মাহবুব হোসাইন
আনোয়ার জাহিদ নামটা উচ্চারিত হলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ভিন্ন মাত্রার ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি। স্মৃতিতে দেখা দেয় বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতে এক অন্যন্য অধ্যায়।
ষাটের দশকে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে যে কজন ছাত্রনেতা বক্তৃতার মাধ্যমে সাধারণ ছাত্রদের হৃদয় কেড়ে নিয়ে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করতে পেরেছিলেন মরহুম আনোয়ার জাহিদ তাদের মধ্যে অন্যতম। রাজশাহী কলেজ থেকে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তার; পরিসমাপ্তি ঘটেছিল বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের নানা দূর্যোগে জাতীয়তাবাদী ও আর্দশিক জনগোষ্ঠীর জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে। পেশাগত জীবনে একজন দক্ষ সাংবাদিক হিসেবেও তাঁর তুলনা কেবল তিনিই। সাংবাদিকদের অবিভক্ত সংগঠন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের তিনি ছিলেন সকলের প্রিয় জাহিদ ভাই।
সাংবাদিক সমাজের জন্য তিনি সব সময় নিজেকে ব্যাস্ত রাখতেন সেই সময়। সংবাদপত্রের উন্নয়ন ও জাতীর বৃহত্তর কল্যাণের লক্ষ্যে তথ্যমন্ত্রী হিসেবে যোগ দেন সামরিক শাসক জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মন্ত্রিসভায় । যদিও শেষ পর্যন্ত মতের অমিলের কারণে সেখান থেকে পদত্যাগ করে ফিরে আসেন সাংবাদিকতার মহান পেশায়। পদের প্রতি নির্লোভ আনোয়ার জাহিদই একমাত্র মন্ত্রী; যিনি এরশাদের লোভনীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন । একবার চায়ের টেবিলে আমাদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের কারণে এরশাদ আমাকে গুলি করে মারতে পারতো; কিন্তু গ্রেফতার করার সাহস পেত না। এমন সৎ আর সাহসী মানুষ ছিলেন মরহুম আনোয়ার জাহিদ। বাংলাদেশের ছোট খাটো নেতাদেরও ঢাকার অভিজাত এলাকায় বাড়ি আছে। কিন্তু মরহুম আনোয়ার জাহিদের মতো একজন উঁচু মাপের মানুষের ঢাকায় এক খণ্ড জমিও ছিল না। শুধু তাই নয়, তাঁর কাছে গচ্ছিত কোন অর্থও ছিল না। যে কারণে অসুস্থ হওয়ার পর একমাত্র মেয়ে সোমা জাহিদ বাবার চিকিৎসার জন্য নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছিলেন।একবার হাসপাতালে তাকে দেখতে গেলে মেয়ের ভূমিকার প্রসঙ্গ আসতেই জাহিদ ভাই চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন, আমার চিকিৎসা করতে যেয়ে মেয়েটা আমার ফকির হয়ে গেলো।
আনোয়ার জাহিদ জন্মেছিলেন ঝিনাইদহ জেলার ঘোড়াশাল ইউনিয়নের নারিকেল বাড়িয়া গ্রামে।চমৎকার ভাবে বক্তব্য উপস্থাপনা ছিল তার একটা বড় গুণ। তাঁর বক্তব্যের সময় গোটা অডিয়েন্স থাকতো পিন পতন নিরবতা। সবাইকে আকৃষ্ট করার মতো ইতিহাসের আলোকে সুললিত কন্ঠে উচ্চমানের বাংল শব্দ ব্যবহার করে অত্যন্ত চমৎকার করে বক্তব্য রাখতেন । ৯০ দশকের শুরুতে তাঁর সাথে যাদের পরিচয় ঘটেছে তারা প্রায় সকলেই জাহিদ ভাইয়ের স্টাইলে বক্তব্য দেবার চেষ্টা করত। আমার সঙ্গে এই ক্ষণজন্মা মানুষটির পরিচয় হয়ছিল ৯০ দশকের গোড়ার দিকে।
র্দীঘ ৯ বসরের স্বৈরশাসনের পতনের মধ্য দিয়ে যখন বাংলাদেশ নতুন করে বিএনপি এর নেতৃত্বে স্বর্নিভরতার দিকে যাত্রা শুরু করে; ঠিক সেই সময় পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তি আওয়ামীলীগ গণতান্ত্রিক সরকারের কার্যক্রমকে ব্যহত করার লক্ষ্যে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে দেশের চলমান সংবিধান পরিপন্থি তথাকথিত সংগঠন “একাত্তরের ঘাতক দালাল র্নিমূল কমিটি” বা ঘাদানিক নামক সংগঠন সৃস্টি করে কথিত গণআদালতের ঘোষণা দেয়। সেই সময় এই সংগঠন সারা দেশে জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের তৎকালিন আমীর মরহুম অধ্যাপক গোলাম আজমের বিচারের নামে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি করে।
এই নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী তৎপড়তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে একদল সাহসী তরুণ ১৯৯২ এর শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত সংগঠন ‘জাতীয় যুব কমান্ড’ প্রতিষ্ঠা করে। এই সংগঠনের সাথে আমারও যুক্ত থাকার সৌভাগ্য হয়ছিল। ইতিহাসের নিরিখে বলা যায় আওয়ামীলীগের রাস্ট্র বিরোধী ষড়যন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী মনোভাবের বিরুদ্ধে জাতীয় যুব কমান্ড ও ভারতীয় দালাল প্রতিরোধ কমিটি (ভাদাপ্রোক) প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্যের সুত্রপাত ঘটায়। ২০২৪ এর বিপ্লবের যাত্রা শুরু হয়েছিল মূলত সেই সময় থেকে।
আমারা আমাদের বক্তব্যকে আরও গণমূখী করার জন্য জাতীয় পর্যায়ের একজন গ্রহণযোগ্য ব্যাক্তিকে খোঁজার চেষ্টা করছিলাম । এমনি এক সময় আমাদের এক সুহৃদ মরহুম আনোয়ার জাহিদের সাথে যোগাযোগ করতে পরার্মশ দেন। সেই মোতাবেক আমরা ১৯৯২ ফেব্রুয়ারির কোন একদিন ঢাকার মহাখালী রেলগেটস্থ শাহীনবাগে তাঁর বাসায় রাত ৯টার দিকে হাজির হই। তখন তিনি বাসায় ছিলেন না। আমারও সিদ্ধান্ত নিলাম দেখা না করে ফিরব না। আমাদের সাথে অন্যান্যদের মাঝে ছিলেন জাতীয় যুব কমান্ডের সভাপতি বি এম নাজমুল হক,সেক্রেটারী জেনারেল আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ , সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহিল মাসুদ।
এছাড়া ভারতীয় দালাল প্রতিরোধ কমিটির (ভাদাপ্রোক) আহ্বায়ক গোলাম নাছির ও যুগ্ম আহ্বায়ক আওলাদ হোসেন বুলবুল আমাদের সঙ্গী হয়েছিলেন। আমরা সকলে রেল লাইনের উপড় বসে মরহুম আনোয়ার জাহিদের অপেক্ষা করছিলাম। রাত আনুমানিক আড়াইটা। একটা সাদা রঙের গাড়ী এসে তাঁর বাসার সামনে থামল। আমরা দেখছিলাম কে এসেছেন। দরজা খুলে যিনি গাড়ী থেকে নামলেন তিনি আর কেউ না, যার সাক্ষাৎ এর অপেক্ষায় আমরা ছিলাম তিনিই এসেছেন। দড়জার তালা খোলার আগেই আমরা তাঁর সামনে হাজির । এতো রাতে এতোগুলো অচেনা যুবকের হঠাৎ আগমনে স্বাভাবিকভাবে সবার আৎকে উঠার কথা। কিন্তু আমরা বিস্ময়ভরে দেখলাম; তিনি স্বাভাবিক থেকে বললেন তোমরা কারা? আমরা আমাদের পরিচয় দিলাম এবং আসার উদ্যেশ্য অবহিত করলাম।তিনি কোন কথা না বলে বললেন উপড়ে চলো। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম। আমাদের বসতে দিয়ে নিজ হাতে চা বানালেন। চা পানের মধ্যেই শুরু হলো কথা। নানা প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে আমরা রীতিমত হাঁপিয়ে উঠছিলাম। তাঁর পর তিনি শুরু করলেন ইতিহাসের নিরিখে বাংলাদেশের রাজনীতির মূল্যায়ন । আমরা সকলেই শুনেই যাচ্ছিলাম। জীবনে এই প্রথম আমাদের রাষ্ট্র সম্পর্কে এতো নিবিড় ঐতিহাসিক পর্যালোচনা প্রথম শুনলাম। কখন যে পূর্ব দিগন্তে লাল সূর্যের উদয় হয়েছে তা বুঝতে পারিনি। যখন তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নীচে এলাম তখন বাজে সকাল ৯টা।
এরই মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর সঙ্গে আমাদের পথচলা। তাঁর উপস্থিতি জাতীয় যুব কামান্ডকে খুব দ্রুত বাংলাদেশের আপামর জনতা জানতে পেরেছিল। তাঁর বক্তব্যের মধ্যদিয়ে সেদিন তথাকথিত সংগঠন “একাত্তরের ঘাতক দালাল র্নিমূল কমিটি” বা ঘাদানিক জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। পরর্তীতে আমাদের প্রতিটি উদ্যোগের সাথে মরহুম আনোয়ার জাহিদ ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে পরেন। তাঁর ধীশক্তি এতোটা প্রবল ছিল তা সত্যিই বিস্ময়কর।
একবার জাতীয় যুব কমান্ডের একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে মতের ভিন্নতা দেখা দেয়। ঐদিন জাহিদ ভাই আমাদের সাথেই ছিলেন। কোন ভাবেই আমাদের মধ্যে এ বিষয়টির কোন প্রকার সমাধান হচ্ছিল না। মরহুম আনোয়ার জাহিদ আমাদের সবাইকে এক টেবিলে বসিয়ে বললেন, তোমাদের মধ্যে যদি এই অবস্থা থাকে তাহলে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে আমাদের মেরে ফেলবে। এক র্পযায়ে জাহিদ ভাই অঝোরে কাঁদলেন। আজ ভাবী কতটা গভীরভাবে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী চেহারা অনুধাবন করতেন তিনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশে বিচারের নামে জাতির শ্রেষ্ঠসন্তানদের হত্যা করেছে। গুম করেছে অগণিত রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে; যা মরহুম আনোয়ার জাহিদ অনুধাবন করেছিলেন আজ থেকে দুই যুগ আগে।
১৯৯৬ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গোটা জাতির উপড় যখন পাথরের মতো চেপে বসেছিল; সেই সময় মরহুম আনোয়ার জাহিদ জাতিকে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের অত্যাচার থেকে বাঁচাতে বিএনপি’র নেতৃত্বে চারদলীয় জোট করার পক্রিয়া শুরু করেন। তিনি কোন এক ঘরোয়া বৈঠকে বলছিলেন , আওয়ামী লীগকে হঠাতে হলে বেগম জিয়া , এরশাদ, গোলাম আজম ও আল্লামা আজিজুল হককে এক মঞ্চে আসতে হবে। এ সময় আমাদের মাঝ থেকে একজন বললেন, জাহিদ ভাই, জেনারেল এরশাদ কি বেগম জিয়ার সাথে বসবেন? জাহিদ ভাই কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, বসতেই হবে। এর পর চারদলীয় জোট গঠন হলো।
১ লা অক্টোবর ২০০১ জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জণগন ভূমিধস বিজয়ের মধ্যদিয়ে চারদলীয় জোটকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনলো। যে জোট মরহুম আনোয়ার জাহিদ করে দিয়েছিলেন সেই আনোয়ার জাহিদ র্নিবাচনের আগেই ষড়যন্ত্রকারীদের কুটকৌশলে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হন। বিএনপি নেতা বর্ষীয়ান পার্লামেন্টারিয়ান শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর একটা মন্তব্যকে সমর্থন করার কারণে মরহুম আনোয়ার জাহিদ ভাই ও শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরর্তীতে প্রবল চাপের মুখে শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বহিষ্কারাদেশ বিএনপি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু মরহুম আনোয়ার জাহিদের বহিষ্কারাদেশ আর প্রত্যাহার করা হয়নি। এ বিষয়ে জাহিদ ভাই
কখনো কোন বিরূপ মন্তব্য করেননি। অথচ যারা আনোয়ার জাহিদকে দল থেকে বের করে দেওয়ার ব্যাপারে জোড়ালো ভূমিকা রেখেছিল, তারাই জেনারেল মঈনের সময় বিএনপিকে দ্বিখণ্ডিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।
একটি স্মৃতির কথা না বললেই নয়। তখন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় । ৪ঠা জুন দৈনিক ইনকিলাবের এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী । ইনকিলাব পাঠক সংসদ কর্তৃক আয়োজিত হোটেল র্পূবাণীতে অনুষ্ঠান। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রধান মেহমান। অনেকের বক্তৃতার পরে মরহুম আনোয়ার জাহিদ ভাইয়ের পালা। তিনি বক্তব্যের শুরুতেই বললেন, জুন মাস তাঁর ভাল লাগে না। এর পর ভাল না লাগার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বললেন, উপমহাদেশে বৃটিশের আগমন এবং ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মাধ্যমে ব্যবসার সুত্রপাত করেছিল জুন মাসে। পলাশীর ট্রাজেডী ঘটেছিল জুন মাসে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল এই জুন মাসে, সংবাদপত্রের অধিকার হরন করা হয়েছিল জুন মাসে এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছে এই জুন মাসে। এর পর পরিশেষে তিনি বললেন, আমার দূর্ভাগ্য আমার জন্ম হয়েছিল এই মাসেই। বেগম জিয়াসহ সবাই রীতিমত হাসিতে ফেটে পরেছিল। আজ ১২ জুন এই ক্ষণজন্মা মানুষটির জন্মদিন। মরহুম আনোয়ার জাহিদ আজীবন যেই অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন সেই ফ্যাসিবাদী অপশক্তি আওয়ামী লীগ গত ৫ আগষ্ট ২০২৪ দেশের আপামর জনগণের সীমাহীন ত্যাগের মধ্যদিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যায়। দেশ আজ নতুন বন্দোবস্ত গ্রহণের পথে।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রশ্নে একজন সাচ্চা জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জীবীত সাহসী জননেতা আনোয়ার জাহিদের মতো নিখাঁদ দেশপ্রেমিক লড়াকু যোদ্ধার বড়ই অভাব।
কিংবদন্তী সাংবাদিক জননেতা মরহুম আনোয়ার জাহিদের জন্মবার্ষিকীতে আজ শপথ হোক, সাচ্চা জাতিয়তাবাদী আর্দশে অনুপ্রাণিত হয়ে সমমনা রাজনৈতিক শক্তি ও ইসলামী দলসমূহের সাথে মেলবন্ধন করে সকল বাঁধা পায়ে দলে স্বকীয় বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রাণপন প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে ইস্পাত কঠিন দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী