ডেস্ক রিপোর্ট:
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, পতিত আওয়ামী লীগের ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠার জন্য দেশকে “পন্থা ও পন্থি”তে বিভক্ত করে রেখেছিলো। স্বাধীনতাপন্থি, পাকিস্তানপন্থি, দক্ষিণপন্থি, বামপন্থি ইত্যাদি নানাবিধি পন্থার রাজনীতি করে ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন করার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, পন্থাকে সামনে এনে জুলুম-নির্যাতন, হত্যা-গুমকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেছে। জুলাই অভ্যুত্থান সেই “পন্থা”র রাজনীতিকে ভেঙ্গে দিয়ে অধিকার ভিত্তিক রাজনীতির নয়া জমানার সূচনা করেছে। ফলে এই সময়ে এসে পন্থাকেন্দ্রীক রাজনীতির বিকাশ হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা যথার্থ না।
শনিবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, জুলাইয়ের আগে থেকেই দেশের সকল ধারার রাজনৈতিক শক্তি এক টেবিলে বসে একই সুরে কথা বলেছে। জুলাইয়ের আগের রাজনৈতিক আন্দোলনে ডানপন্থি, ইসলামপন্থি, বামপন্থি, মধ্যপন্থি সকলকে একত্রে আন্দোলন করতে দেখেছে দেশবাসী। জুলাই-২৪ এর আন্দোলনেও সকল পন্থার মানুষ কাঁধে কাঁধ রেখে ফ্যাসিবাদের বুলেটের মোকাবিলা করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরেও রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য-বিবৃতি ও সংস্কার এজেন্ডাতে পরিষ্কার যে, কেউ নির্দিষ্ট কোন পন্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে না।
ইউনুছ আহমাদ আরও বলেন, সকলের প্রধান বিবেচ্য হচ্ছে সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে দেশে নতুন কোন ফ্যাসিবাদ তৈরির পথ বন্ধ করা। সেজন্যই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা এককবাবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকবে নাকি কোন যৌথ কমিটির হাতে থাকবে তা নিয়ে তর্ক হচ্ছে। একই ব্যক্তি দল ও সরকার প্রধান হওয়া না হওয়ার বিষয়ে তর্ক হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি এখন পন্থা ভিত্তিক না; বরং অধিকার ভিত্তিক। এমন সুবর্ণ সময়ের রাজনীতিতে “দক্ষিণপন্থার উত্থান”কে বড় আকারে উপস্থাপন করা এবং তার ভিত্তিতে ভীতি ছড়ানো কোনভাবেই কাম্য না।
অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, শনিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব “দক্ষিণপন্থিদের উত্থান” সম্পর্কিত এক প্রশ্নে যেভাবে উত্তর দিয়েছেন তা জনমনে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ভুল বার্তা দেবে।
তিনি দেশের রাজনীতিতে এমন দলের উত্থান দেখে উদ্বিগ্ন হয়েছেন “যারা গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না। পরিষ্কার ঘোষণা দিয়ে করে না। আবার তারা নিজেরা জোর করে চাপিয়ে দিতে চায় মতবাদকে, এটা নিঃসন্দেহে অ্যালার্মিং সিচুয়েশন। কিছু কিছু দলের মধ্যে এমনও কথা আছে যে মহিলাদের তারা কিছুতেই সামনে আনতে চায় না। মহিলাদের তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা তো দূরের কথা, তারা সামাজিক ক্ষমতায়নও করতে চায় না।”
দেশের অন্যতম প্রধান দলের মহাসচিব হিসেবে তার বক্তব্য আরো সতর্কতার সঙ্গে হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন ইউনুছ আহমাদ।