আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরাইল যদি ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধ শুরু করে, তবে তার দেশ সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। তিনি জানান, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি নিয়ে তিনি আশাবাদী নন। তবে এটিও নিশ্চিত করেছেন যে, তেহরান শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে তার পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। স্থানীয় সময় বুধবার আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান এই মন্তব্য করেন।
এটি ছিল ইসরাইলের সঙ্গে সম্প্রতি শেষ হওয়া ১২ দিনের সংঘাত-পরবর্তী তার প্রথম কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকারের একটি। ওই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষে হস্তক্ষেপ করে এবং ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালায়।
ইরানের প্রেসিডেন্টের মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এলো, যখন পশ্চিমা দেশগুলো বলছে তারা ইরানের চলমান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একটি সমাধান খুঁজছে—যদিও অনেক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী ততটা ক্ষতি হয়নি।
পেজেশকিয়ানের বক্তব্য দুদিন আগে দেওয়া ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরাগচি বলেন, তেহরান কখনোই তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি ত্যাগ করবে না। তবে তিনি জানান, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতার পথে যেতে ইরান প্রস্তুত—যেখানে ইরান নিশ্চয়তা দেবে যে, এই কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হবে এবং এর বিনিময়ে আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে।
সাক্ষাৎকারে মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ইসরাইলের যে কোনো নতুন সামরিক পদক্ষেপ মোকাবিলায় আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আবারও ইসরাইলের গভীরে পাল্টা হামলা চালাতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ করে যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, সেটি টিকে থাকবে-এমনটা মনে করছে না ইরান।
পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমরা এটি (যুদ্ধবিরতি) নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী নই। সে কারণেই আমরা যে কোনো সম্ভাব্য পরিস্থিতি এবং প্রতিক্রিয়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রেখেছি। ইসরাইল আমাদের ক্ষতি করেছে, আমরাও তাদের ক্ষতি করেছি। তারা আমাদের ওপর প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে, আর আমরা তাদের গভীর অভ্যন্তরে পাল্টা আঘাত করেছি; তবে তারা নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি গোপন করছে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত ইরানে ৯০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অনেকেই সাধারণ নাগরিক। অন্যদিকে ইসরাইলে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছে।