ট্রাম্পের ঘোষণায় নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের আশঙ্কায় বিশ্ব

ডেস্ক রিপোর্ট:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার ইঙ্গিতকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে নতুন স্নায়ুযুদ্ধের আশঙ্কা তীব্র হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক ঘোষণায় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ‘রাশিয়া-চীনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আবারো পরীক্ষার দিকে এগোতে হবে। তবে তিনি প্রকৃত বিস্ফোরক পারমাণবিক ওয়ারহেড পরীক্ষা বোঝাচ্ছেন নাকি সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা—তা স্পষ্ট না হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।

এর আগে ১৯৯২ সালে সর্বশেষ পূর্ণমাত্রার পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরিচালনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। নেভাদা’র পরীক্ষাস্থলে সর্বশেষ পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটেছিলওই বছর সেপ্টেম্বরে। স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরপরই, পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধ নতুন করে গতি লাভ করে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ.ডব্লিউ. বুশ পরীক্ষার উপর একতরফা স্থগিতাদেশ আরোপ করেন। এরপর থেকে বিশ্বের বড় শক্তিগুলো নীরবে একটি অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছে। ট্রাম্পের মন্তব্য সেই নীরব চুক্তিকে ভেঙে দিতে পারে, যা স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্বে তুলনামূলক স্থিতিশীলতা এনে দিয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষা পুনরায় শুরু করে, তবে রাশিয়া ও চীন বাধ্য হয়ে পাল্টা পরীক্ষা চালাতে পারে—যা সরাসরি একটি নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও স্নায়ুযুদ্ধের আবহ তৈরি করবে।

কম্প্রিহেনসিভ টেস্ট ব্যান ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিটিবিটি) প্রধান রবার্ট ফ্লয়েড সতর্ক করে বলেছেন, যে কোনো রাষ্ট্রের পরীক্ষাই “বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য অস্থিতিশীল ও বিপজ্জনক”—বিশেষত এমন সময় যখন পরাশক্তিগুলোর মধ্যে আস্থার সংকট চরমে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও আট দশকের পুরোনো পারমাণবিক পরীক্ষার ধ্বংসযজ্ঞ স্মরণ করিয়ে সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা “প্রথমে পরীক্ষা করবে না”, তবে যুক্তরাষ্ট্র শুরু করলে সমান পদক্ষেপ নেবে। চীন যুক্তরাষ্ট্রকে উসকানিমূলক সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও উদ্বেগ জানিয়েছে, কারণ এই উত্তেজনা আঞ্চলিক সংঘাতগুলোকে আরও জটিল করতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের নতুন অবস্থান কেবল একটি সামরিক সিদ্ধান্ত নয়—এটি স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী বৈশ্বিক নিরাপত্তা কাঠামোকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করার ইঙ্গিত, যার পরিণতি দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ হতে পারে।
সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

Share