প্যারিসে বিতর্কিত অনুষ্ঠান ঘিরে ফ্যাসিবাদ পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ ;ফ্রান্স-বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের নিন্দা ও প্রতিবাদ 

বিশেষ প্রতিনিধি :

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে গত ২৩ জুলাই এক প্রেস ক্লাবের ব্যানারে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ও অতিথিদের পরিচয় ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনুষ্ঠানে এক বিতর্কিত ব্যক্তিকে “প্রধান অতিথি” এবং “মিডিয়া ব্যক্তিত্ব” হিসেবে উপস্থাপন করাকে কেন্দ্র করে এই প্রতিক্রিয়ার জন্ম হয়।

ফ্রান্স-বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (এফবিজেএ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির গণমাধ্যমে সরাসরি সম্পৃক্ততার কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। একইসঙ্গে, নাগরিক সমাজে তার কার্যকর কোনো ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষার্থীদের মৃত্যু ঘিরে যেসব ব্যক্তি বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন, উক্ত আয়োজনে তাদের একজনের উপস্থিতি অনেকের জন্যই বেদনাদায়ক এবং প্ররোচনামূলক বলে বিবেচিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে আরও কিছু রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত ব্যক্তির অংশগ্রহণও লক্ষ্য করা গেছে, যারা অতীতে বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক প্রসঙ্গে বিভাজনমূলক বক্তব্য দিয়ে কমিউনিটিতে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন।

ঘটনাটির পর, অনুষ্ঠানে উপস্থিত দুইজন সাংবাদিক তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ভুল বোঝাবুঝি দূর করার চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে। ফ্রান্স-বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন তাদের এই ব্যাখ্যাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও পেশাগত নিরাপত্তা রক্ষায় নিজেদের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।

এফবিজেএ মনে করে, ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের এক বছর পার হলেও এখনও ন্যায়বিচার অধরাই থেকে গেছে। নিহত সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের পরিবারেরা এখনো বিচার প্রত্যাশা করছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “অতীত ঘটনা উপেক্ষা করে যে কোনো উদ্যোগের মাধ্যমে পতিত ফ্যাসিবাদী চক্রকে সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।” এই ধরনের আয়োজন সম্পর্কে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিগুলোর সচেতন ভূমিকা প্রত্যাশা করেছে সংগঠনটি।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে সকল আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা ইতিহাস ও বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে অবগত থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করেন। পাশাপাশি, ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যদের প্রতি সচেতন থেকে সত্য-ভিত্তিক মূল্যায়নের মাধ্যমে অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এছাড়া, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের পক্ষে সক্রিয় থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

Share