নজর কাড়লেন ৫ খলনায়ক

বিনোদন ডেস্ক:

ঈদে মুক্তি পেয়েছে ছয়টি বাংলা সিনেমা, ওটিটিতে এসেছে তিন ওয়েব ফিল্ম ও সিরিজ। নায়ক–নায়িকার পাশাপাশি এসব সিনেমা ও সিরিজে নজর কেড়েছে খলনায়কেরাও। তাঁদের মধ্যে আলোচিত পাঁচ খল অভিনেতাকে নিয়ে এ প্রতিবেদন।

শহীদুজ্জামান সেলিম
মঞ্চ ও ছোট পর্দার এই অভিনেতাকে কয়েক বছর ধরেই বড় পর্দায় খল চরিত্রে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। কিন্তু অনেক সময়ই তাঁর চরিত্রগুলো একই রকম হয়ে যায়। এবারের ঈদের তিনটি সিনেমা—‘বরবাদ’, ‘দাগি’ ও ‘জংলি’তে তাঁকে দেখা গেছে। বরবাদ ও ‘জংলি’তে তাঁকে আইনজীবীর ভূমিকায় দেখা গেছে।

শহীদুজ্জামান সেলিম। ছবি: আশরাফুল আলম

শহীদুজ্জামান সেলিম। ছবি: আশরাফুল আলম

‘বরবাদ’-এর চরিত্রটি ছোট্ট হলেও দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছে, তবে ‘জংলি’তে তাঁর চরিত্রটি সেভাবে ছাপ ফেলতে পারেনি। সিনেমায় চরিত্রটির উপস্থিতিও খাপছাড়া। তবে শিহাব শাহীনের দাগি সিনেমায় তাঁর চরিত্রটি বেশি মনে রাখার মতো। এ সিনেমায় অবাঙালি ভারতীয় চোরাকারবারি চরিত্রে তিনি ভালোই মানিয়ে গেছেন। সিনেমায় তাঁর হিন্দি-বাংলা মেশানো সংলাপ, শায়েরিপ্রীতি মিলিয়ে চরিত্রটি যথাযথ। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি খুব বেশিক্ষণ নয়; কিন্তু যতক্ষণ ছিলেন, ঠিকই নিজের জাত চিনিয়েছেন এই অভিনেতা।

সুমন আনোয়ার
নির্মাতা সুমন আনোয়ারও কয়েক বছর ধরে ওয়েব সিরিজে খল চরিত্রে অভিনয় করে আসছেন। চিত্রনাট্যে খামতি থাকলেও নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে যেকোনো দৃশ্যকেই উপভোগ্য করে তোলার ক্ষমতা তাঁর আছে।

 সুমন আনোয়ার। ছবি: ফেসবুক

সুমন আনোয়ার। ছবি: ফেসবুক

সুমন আনোয়ারের চরিত্রের দৈর্ঘ্য কতটা সেটা নয়; বরং তিনি কী করছেন, সেটা দেখার জন্যই যেন মুখিয়ে থাকেন দর্শক। যেমন বছরের শুরুতে রায়হান রাফীর ওয়েব সিরিজ ‘ব্ল্যাকমানি’তে তাঁর সংলাপগুলো আলোচিত হয়েছিল।

ঈদে মুক্তি পাওয়া শরাফ আহমেদ জীবনের ‘চক্কর ৩০২’ সিনেমায় তাঁর চরিত্রটি বেশ ভালোভাবে লেখা হয়েছে। ‘গন্ডার বাবু’ হিসেবে সুমন আনোয়ারের উপস্থিতি ছিল সত্যিই ছাপ ফেলার মতো। ঠান্ডা মাথার অপরাধী, ছোট ছোট সংলাপে পর্দায় তাঁর প্রভাব বোঝা যায়। লঞ্চে মোশাররফ করিমের সঙ্গে তাঁর একটি দৃশ্য আছে, সেখানেও তিনি ভালো করেছেন। তবে ঈদে মুক্তি পাওয়া শিহাব শাহীনের সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’-এ তাঁর অভিনীত চরিত্রটি একেবারেই মনে রাখার মতো নয়।

যীশু সেনগুপ্ত
বাংলা সিনেমার রোমান্টিক নায়ক ছিলেন যীশু, দক্ষিণ ভারতের সিনেমা তাঁকে বানিয়েছে খলনায়ক। গত বছর কলকাতার ‘খাদান’ সিনেমাতেও খল চরিত্র করেছেন, দেবের সঙ্গে সমানে সমানে দিয়েছেন টক্কর। মেহেদী হাসানের ঈদের সিনেমা ‘বরবাদ’-এর টিজারের তাঁর একটু ঝলকই ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল। মনে করা হচ্ছিল, শাকিব খানের সঙ্গে পর্দায় যীশুর সমানে সমানে টক্কর হবে।

যীশু সেনগুপ্ত। অভিনেতার ইনস্টাগ্রাম থেকে

যীশু সেনগুপ্ত। অভিনেতার ইনস্টাগ্রাম থেকে

‘বরবাদ’–এ সেটা পুরোপুরি না হলেও মোটের ওপর খারাপ করেননি। তাঁর চরিত্রটি আরও একটু ভালোভাবে লেখা হলে ঈদের সবচেয়ে আলোচিত ভিলেনদের একজন হতে পারতেন তিনি। প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা দেখার সময় মনে হয়েছে, যীশু অভিনীত কিছু দৃশ্য হয়তো বাদ দিয়েছেন নির্মাতা। তাঁর মতো একজন ‘হেভিওয়েট’ তারকাকে আরও ভালোভাবে ব্যবহারের সুযোগ ছিল।

এরফান শিবলু
বছরটা দারুণভাবে শুরু করেছিলেন এই গায়ক ও অভিনেতা। চরকিতে মুক্তি পাওয়া নুহাশ হুমায়ূনের ২ষ-র পর্ব ‘বেসুরা’য় কসাইয়ের চরিত্র রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ঈদে তাঁকে দেখা গেছে এম রাহিমের জংলি সিনেমায়।

এরফান শিবলু। ফেসবুক থেকে

এরফান শিবলু। ফেসবুক থেকে

এ ছাড়া ওটিটিতে কাজল আরেফিনের ওয়েব ফিল্ম ‘হাউ সুইট’ ও আশফাক নিপুণের সিরিজ জিম্মি-তেও ছিলেন। এগুলোর মধ্যে জংলিতে তাঁর অভিনীত চরিত্রটি ততটা ভালোভাবে লেখা হয়নি। ‘জিম্মি’তে তাঁর অভিনীত খল চরিত্রটি অবশ্য বেশ মজার ছিল। একই কথা প্রযোজ্য ‘হাউ সুইট’-এর ক্ষেত্রে। সেখানেও তিনি খলনায়ক তবে তাঁকে দেখে ভয়ের চেয়ে হাসিই পায় বেশি। এ ছবিতে তাঁর কমিক টাইমিং, অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে।

রাশেদ মামুন অপু
ঈদের দুই সিনেমা ‘জংলি’ ও ‘দাগি’তে ছিলেন খল চরিত্রের নিয়মিত এই অভিনেতা। ‘জংলি’তে তাঁর অভিনীত চরিত্রটির দুটি পর্যায় আছে। ক্রাইম রিপোর্টার হিসেবে তিনি এ ছবিতে খারাপ করেননি। তবে সবচেয়ে চমকে দিয়েছেন ‘দাগি’তে।

রাশেদ মামুন অপু। ছবি: ফেসবুক

রাশেদ মামুন অপু। ছবি: ফেসবুক

তাঁর অভিনীত বেশির ভাগ দৃশ্যই ছবির দ্বিতায়ার্ধে। ছবিতে তাঁর জন্য বরাদ্দ সংলাপগুলোও ভালো ছিল। সঙ্গে ক্রুর চাহনি আর শয়তানি হাসি দিয়ে নেতিবাচক চরিত্রে আবারও নজর কেড়েছেন তিনি।

Share