চঞ্চল চৌধুরীকে পুরস্কৃত করলেন ইশরাক, সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড়

বিনোদন ডেস্ক:

অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীকে একটি অনুষ্ঠানে পুরস্কার দিয়েছেন বিএনপি নেতা ও দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন। এ নিয়ে সোমবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় চলছে। গত শুক্রবার চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ফিল্ম অ্যান্ড আর্টস (বাইফা) অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইশরাক হোসেন। সেখানে তিনি চঞ্চল চৌধুরীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন সাংবাদিক, লেখক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান।

পোস্টে একটি দৈনিক গণমাধ্যমের ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির খবরের স্ক্রিনশট জুড়ে দিয়েছেন তিনি। এ খবরের শিরোনাম ছিল ‘মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি বন্ধের আহ্বান’। খবরে বলা হয়, রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের কাছে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। আগুনে পুড়ে নিহত ৫৪ জন মানুষের একটি তালিকাও খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনে টাঙিয়ে দেন তারা।

তাদের আশা, খালেদা জিয়া একবার হলেও এই তালিকা দেখবেন। এতে তার মনে মায়া হবে। এই মানববন্ধনে অংশ নেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, অভিনেতা জাহিদ হাসান, চিত্রনায়িকা নাসরিন আক্তার নিপুণ ও তারানা হালিম। এ ছাড়া এই মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা হাসান ইমাম, চঞ্চল চৌধুরী, নাদের চৌধুরী, তুষার খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওহিদুজ্জামানসহ শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি।

মারুফ কামাল খান তার প্রতিক্রিয়ায় লেখেন, ‘এই ছবিখানা দেখিয়া মনটা বড়ই বিগড়াইয়া গেল।’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করতাম তখন। তিনি এবং আরো অনেকের সঙ্গে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন অফিসে আমিও আটকা পড়েছিলাম। শেখ হাসিনার অনুগত পুলিশ বাইরে থেকে তালা মেরে আমাদের তিন মাস অবরুদ্ধ করে রেখেছিল।

নন্দিত নেত্রী ম্যাডাম জিয়ার ওপর পুলিশ পিপার স্প্রে ছুড়েছিল। আমাদের অনেকের গায়ে ও চোখে, মুখে সেই স্প্রে লেগেছিল। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ফোন, ইন্টারনেট, গ্যাস, পানি এবং অবশেষে বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন বাইরে থেকে খাবারও ঢুকতে দেওয়া হতো না। চিড়া-মুড়ি ও অন্যান্য শুকনো খাবার খেয়ে জীবন বাঁচাতে হয়েছে। ভয়ংকর আতঙ্কের সে ছিল এক বীভৎস সময়। সে সময়ই আমি নিজে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ি।

আমাদের আটকে রেখে আসামি করা হয় নরহত্যা, বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগ, হামলার অসংখ্য মামলায়। প্রতিনিয়ত ছিল পুলিশ ও গুণ্ডাদের ভেতরে ঢুকে হামলা চালানোর আস্ফালন। ফ্যাসিস্ট সরকারের সন্ত্রাসী নেতাকর্মীরা এসে রোজ ঘেরাওয়ের মহড়া চালাতেন। নানা হুমকি দিতেন। এই চঞ্চল চৌধুরীসহ লীগের কিছু নট-নটীও এসেছিল আমাদের ঘেরাও করতে।

ওরা অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলেছে, তিন মাস ধরে অবরুদ্ধ থেকে আমরা নাকি অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছি! ওরা দাবি করেছে, আমাদের কঠিন সাজা দিতে হবে। এগুলো কি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ছিল? এখন সংস্কৃতির নামে ওদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে দেখলে খুব কষ্ট হয়, ভারী কষ্ট! এ কষ্টের কথা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না।

সাংবাদিক ও লেখক আশরাফ কায়সার ফেসবুকে ইশরাক হোসেনের পুরস্কার দেওয়ার ছবির সঙ্গে পত্রিকার প্রকাশিত খবরের স্ক্রিনশট দিয়ে লেখেন, ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টরা মুখোশ বদলাতে শুরু করেছে।’ মারুফ কামাল খান এবং আশরাফ কায়সারের পোস্টে অসংখ্য মন্তব্য করছেন নেটিজেনরা।

Share