ডেস্ক রিপোর্ট:
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে না, যারা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাকে বিশ্বাস করে না, যারা ত্রিশ লক্ষ শহীদকে অস্বীকার করে, বাংলাদেশে তাদের ভোট চাওয়ার অধিকার নাই, রাজনীতি করার অধিকার নাই।’
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু।
রোববার দুপুরে বুড়িচং উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে বুড়িচং আনন্দ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “গ্রাম বাংলার মা-বোনদের বিবর্তন ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনে বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপক ভূমিকা। বেগম খালেদা জিয়া নোবেল প্রাইজ পাওয়ার যোগ্য। গ্রাম বাংলার মা-বোনদের যে বিবর্তন, সংস্কৃতির যে বিবর্তন তার একমাত্র কারণ খালেদা জিয়া। ৯১ সালে তিনি ক্ষমতায় এসে মেয়েদের বিনা বেতনে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেছেন; উপবৃত্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
বক্তব্যে বরকতউল্লাহ বুলু আরও বলেন, ‘৯০ এর গণ-অভ্যুত্থান খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে। সেই অভ্যুত্থানের পর চাইলে সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিয়ে যেতে পারতো কিন্তু তারা ক্ষমতা নেয়নি। কারণ আমাদের সেনাবাহিনী দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, মুক্তিযুদ্ধের সেনাবাহিনী। তারপর ৯১ সালে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে। যে নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
বুলু আরো বলেন, ‘শেখ মুজিব বাকশাল গঠন করে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বাকশাল বহাল না রেখে কেউ কোনো নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চাইলে রাষ্ট্রপতি বরাবর আবেদন করার কথা বলেন। এরপরেই আব্দুল মালেক উকিল প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কাছে আওয়ামী লীগকে পুনরায় গঠন করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি চান। আওয়ামী লীগ- শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অনুদানের প্রাপ্ত আওয়ামী লীগ। সেদিন যদি মালেক উকিলের আবেদনে জিয়াউর রহমান সারা না দিতেন তাহলে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকত না।’
আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য সহজ নয় উল্লেখ করে বুলু বলেন, ‘দেশি-বিদেশি অনেক শক্তিই বিএনপির বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। ভূ-রাজনৈতিক কারণে সারা বিশ্বের অনেক ঈগল পাখির চোখ বাংলাদেশে। সেই চোখ উপেক্ষা করে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। এর জন্য বিএনপির বিকল্প নেই। আমরা উগ্র রাজনীতিতে বিশ্বাস করিনা।
নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা এমন কোনো আচরণ করবেন না, যে আচরণের কারণে বিএনপিকে নিয়ে কথা ওঠে, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কথা ওঠে, তারেক রহমানকে নিয়ে কথা ওঠে। আর কেউ যদি এমন আচরণ করেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো হাইব্রিড যেন বিএনপিতে স্থান না পায় সে বিষয়ে সতর্ক নজর রাখতে হবে।’
বুড়িচং উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক মোস্তাক মিয়া, সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ভিপি আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব হাজী জসীম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য হেনা আলাউদ্দিন, বুড়িচং উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী কবির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল হোসেন, হুমায়ূন কবির বাবুল, আবু ইউসুফ তুহিন সহ বিএনপির নেতাকর্মীরা।
সম্মেলন শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট আলী আক্কাস বুড়িচং উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে এটিএম মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কবির হোসেন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে হুমায়ুন কবির বাবুলের নাম ঘোষণা করেন।