সিলেটে আইডিপি’র IELTS পরীক্ষায় চরম অব্যবস্থাপনা: দায় নেবে কে?

আইইএলটিএস বা IELTS অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম, যা আন্তর্জাতিক মানের একটি পরীক্ষা। আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন কোন পরীক্ষার কথা উঠলেই আমরা একটি নির্দিষ্ট মান, শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্ব আশা করি। কিন্তু গতকাল সিলেটের কুশিয়ারা কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত IELTS পরীক্ষায় যা ঘটেছে, তা শুধু হতাশাজনক নয়, বরং শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞার নামান্তর। উচ্চ হারে ফি দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করেছিল একটি সুশৃঙ্খল, নির্ভরযোগ্য পরিবেশ। কিন্তু বাস্তবে তারা পেয়েছে দেরিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত , ত্রুটি ও চরম অব্যবস্থাপনা। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পর পরীক্ষা শুরু হয়। Listening সেকশনে পরীক্ষার সময় টেকনিক‍্যাল সিস্টেম কাজ না করায়, শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয় Writing সেকশন দিয়ে শুরু করতে যা IELTS-এর আন্তর্জাতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। বারবার হেডফোন নষ্ট হওয়া, বন্ধ হয়ে যাওয়া, এমনকি পর্বের মাঝে বিদুৎ বিভ্রাট। সব মিলিয়ে পুরো পরীক্ষাই হয়ে ওঠে বিভ্রান্তিকর ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার মতো এক অভিজ্ঞতা।

আরও দুর্ভাগ্যজনক হলো, এত দীর্ঘ সময়ব্যাপী পরীক্ষার মাঝে কোনো পানি বা খাবারের ব্যবস্থাও রাখেনি কর্তৃপক্ষ ।শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবে ক্লান্ত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সেই সাথে বাইরে অপেক্ষমান অভিভাবকরাও ছিল তথ্যবিহীন, কেন দেরি হচ্ছে তাও জানানো হয়নি কাউকে, উদ্বেগে কাটিয়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা নয়। এটি একটি প্রতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা, যেখানে প্রস্তুতির ঘাটতি, দায়িত্বহীনতা এবং মানবিকতার অভাব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

আমরা মনে করি, এই পরীক্ষাটি পুনরায়, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গ্রহণের ব্যবস্থা করা উচিত। একইসাথে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে স্বচ্ছ তদন্ত, দায়ীদের জবাবদিহি এবং পরীক্ষার স্ট্যান্ডার্ড ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ একান্ত জরুরি।

IELTS শুধু একটি সার্টিফিকেট অর্জনের পরীক্ষা নয়, এটি হাজারো তরুণের স্বপ্নপূরণের পথ। সেই স্বপ্ন যেন অব্যবস্থাপনার বলি না হয়।এই দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।

কাওসার আহমেদ, সম্পাদক, তেঁখ বাংলা

Share